রোগ-শোক, অসুস্থতা, মহামারীতে মানুষ মারা যাবেই। কিন্তু কিছু মৃত্যু থাকে ‘অ্যাভয়েডেবল’ (এড়ানো সম্ভব), আবার কিছু মৃত্যু ‘আনঅ্যাভয়েডেবল’ (এড়ানো অসম্ভব)।
যেসব মন্ত্রী, এমপি, সচিব, প্রভাবশালী ব্যবসায়ী বা এদের আত্মীয়-স্বজনেরা সিএমএইচ,বিএসএইচের মতো হাসপাতালে ভর্তিরত অবস্থায় মারা যাচ্ছেন, এই মৃত্যুগুলো ‘আনঅ্যাভয়েডেবল’। কারণ, তারা এসব ‘অভিজাত-বিশেষায়িত’ হাসপাতালে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন, অক্সিজেন, আইসিইউ, ভেন্টিলেটর পেয়েছেন, কারো কারো জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। অর্থ্যাৎ, রাষ্ট্রীয় সকল সুবিধা এবং দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দিয়েও তাদের বাঁচানো যায়নি।
অপরদিকে, বহু সাধারণ মানুষ দেশের সরকারি-বেসরকারি কোনো হাসপাতালেই ভর্তির সুযোগ পাননি; কেউ বিনা চিকিৎসায় নিজের বাড়িতে, কেউ রাস্তায়, কেউ অ্যাম্বুলেন্সে, কেউ হাসপাতালের গেটে মারা গেছেন। যারা হাসপাতালে ভর্তি হতে পেরেছিলেন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ অক্সিজেনের অভাবে, কেউবা আইসিইউ না পাওয়ায় মারা যান। হয়তো একটু ‘বেটার ট্রিটমেন্ট’ পেলে এদের অনেককেই বাঁচানো যেত। এই মৃত্যুগুলো ‘অ্যাভয়েডেবল’।
‘অ্যাভয়েডেবল’ এবং ‘আনঅ্যাভয়েডেবল’ মৃত্যু একই তাৎপর্য বহন করে না। ‘অ্যাভয়েডেবল’ মৃত্যুগুলো আসলে এক ধরনের হত্যাকান্ড। ‘ভিআইপিতন্ত্রী বাংলাদেশে’ বহুদিন ধরেই এই হত্যাকান্ডের কাঠামোগত ব্যবস্থা জারি আছে। করোনা নামক মহামারী সেই ব্যবস্থাকে উদোম করে দিয়েছে ।
মন্জুরুল ইসলাম বাবু
সাংবাদিক, রাজনৈতিক কর্মী ও সংগঠক