১৮ কোটি মানুষের ছোট্ট দেশে ভয়ংকর ছোঁয়াচে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে আমরা আর কতটুকুই বা করতে পারি! তবে এটুকু হলফ করে বলতে পারি- সাধ্যের সমস্তটুকু দিয়ে গণসংহতি আন্দোলন এবং তার সহযোগী গণসংগঠনসমূহ জনগণের পাশে থাকার চেষ্টা করছে। আমাদের মতো আরো অসংখ্য সংগঠন তাদের সাধ্যমত কাজ করছে। এদেশের সরকার সৎ থাকলে, জনগণের প্রতি তার দায়বোধ থাকলে আরো সফলভাবেই আমরা করোনা প্রতিরোধে কাজ করতে পারতাম।বিশ্বের অন্যান্য দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর সময় থেকেই আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে সরকারের কাছে বিভিন্ন প্রি-কোশানারি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছি। প্রথমদিকে সরকার সঠিকমাত্রায় গুরুত্ব দিলে আমার দেশ হয়তো তেমন ক্ষতির সশিকার নাও হতে পারতো। আমরা গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিকভাবে সরকারের ওপর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টির পাশাপাশি জনগণের পাশে থাকাটাকেও একই সাথে গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান করেছি।অপ্রতুল হলেও, যা করছি আমরাগণসংহতির সহযোগি সংগঠন হিসেবে- বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি, বহুমুখী শ্রমজীবী ও হকার সমিতি, নারী সংহতিসহ অন্যান্য বন্ধু সংগঠনগুলোও এই দুর্যোগে বিপুল মাত্রায় সক্রিয় আছে।
প্রথমদিকে আমরা সচেতনতামূলক কাজ করার পাশাপাশি মাস্ক, হ্যান্ড সেনিটাইজার, সোফি ওয়াটার, স্টেরিলাইজেশান স্প্রে ইত্যাদি বানানো ও বিলি করার কাজ করেছি, এখনও করছি। একটা পর্যায়ে যখন দেখা গেলো স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত ডাক্তার, নার্সসহ অন্যান্য হাসপাতাল স্টাফদের সুরক্ষা সরঞ্জাম পর্যাপ্ত সরবরাহ করার সরকারি উদ্যোগ যথেষ্ট না, তখন আমরা পিপিই বানানো ও তা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আমাদের সাধ্যমত বিলি করাও শুরু করলাম, যা এখনো চলছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে আমাদের প্রধান সমন্বয়কারী জননেতা জোনায়েদ সাকি জোনায়েদ সাকি জরুরী ভিত্তিতে ‘স্বাস্থ্যগত জরুরী অবস্থা‘ জারি করারও দাবি জানান। আমাদের মহাজ্ঞানী সরকার তখন সে দাবি উপেক্ষা করলেও পরবর্তীতে অবস্থাদৃষ্টে এক ধরণের লকডাউনের ঘোষণা দেয়। কিন্তু এর আফটার ইফেক্ট নিয়ে সরকারের প্রস্তুতির কেমন ঘাটতি ছিলো এবং এখনো আছে তা সকলেই দেখতে পাচ্ছি। সরকারি ছুটি ও লকডাউন পরিস্থিতিতে ব্যাপক খাদ্য সংকটে পড়েছে দেশের দরিদ্র, দিনমজুর, শ্রমজীবী মানুষ। এই পরিস্থিতিতে গণসংহতি আন্দোলন ও তার সহযোগী সংগঠনসমূহ মানুষের সহযোগিতা নিয়ে ওই সকল দরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্য সামগ্রী বিতরণের কাজও ইতিমধ্যে শুরু করেছে। আপনাদের সহযোগিতা পেলে সামনের দিনগুলোতে এই কাজ আরো বিস্তৃত করা সম্ভব হবে।
সকল কর্মকাণ্ড এখানে ছোট পরিসরে তুলে ধরা কঠিন। ঢাকার বিভিন্ন শ্রমিকাঞ্চলে গণসংহতি আন্দোলন ছাত্র ও শ্রমিক সংগঠনকে সাথে নিয়ে খাদ্য সামগ্রী ও চিকিৎসা সামগ্রী বিতরণ করেছে।
নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় সোফি ওয়াটার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক বিতরণ এবং জীবাণুনাশক ছিটানোর কাজ করছে। পাশাপাশি দরিদ্রদের জন্য খাদ্য সামগ্রীও বিতরণ করা হচ্ছে সাধ্যমতো। নারায়ণগঞ্জে ও ঢাকার মোহাম্মদপুরে আমাদের ছাত্র বন্ধুরা বিভিন্ন গণসমাগমের এলাকা চিহ্নিত করে সামাজিক দুরুত্ব বজায় রাখার জন্য বৃত্ত অংকন করেছে। যা মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
গার্মেন্ট শ্রমিক সংগঠন ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন শ্রমিক অঞ্চলে মাস্ক, স্যানিটাইজার বিতরণ করেছে এবং এখন খাদ্য সামগ্রী বিতরণের কাজ করছে। এছাড়াও খুলনা, বরিশাল, কুমিল্লা, বাগেরহাট, রাজশাহী, নওগাঁ, ফেনী, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সাধ্যমত জনগণের পাশে থাকার চেষ্টা অব্যাহত আছে।
যশোরে ছাত্র ফেডারেশনের অকালপ্রয়াত নেতা ডাঃ শাওন স্মৃতি পাঠাগারের বন্ধুরাও আমাদের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করছে। এছাড়াও আমাদের সকলের প্রিয় প্রতিষ্ঠান ‘আমাদের পাঠশালা‘ স্কুলের বাচ্চাদের ও তাদের পরিবার এবং আশেপাশের দরিদ্র মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে। স্কুল এখন হয়ে উঠেছে- ত্রাণ কেন্দ্র।
আপনারাই আমাদের শক্তি ও প্রেরণাঃ
আমাদের এই সকল কর্মকাণ্ডে আমাদের দরদী বন্ধুরা, শুভানুধ্যায়ীগণ, মানবিক মানুষজন সহযোগিতা করেছেন, করছেন। আমরা জানি- আপনারা সামনের দিনেও পাশে থাকবেন। এই দুর্যোগের সময়েই মানুষ চেনা যায়, আমরা চিনছিও। ঠিক তেমনই ভাবে অমানুষও চেনা যায়, সেটাও আমরা চিনছি। আর চেনা যায়- গণবিরোধী রাষ্ট্রযন্ত্রকে ও জবাবদিহিহীন সরকারকে। তবে আমরা আস্থা রাখি জনগণের ওপর, বিশ্বাস করি- পরিবর্তন সম্ভব। মানুষই পারে সেই পরিবর্তন আনতে। আজ যেমন দুর্যোগকালে মানুষই দাড়াচ্ছে মানুষের পাশে।যারা আমাদের এই কাজে সাধ্যমত সহযোগিতা করতে চান, তাঁদের জন্যঃ
★Bank Account: Ganosamhati Andolon
Account No: 107.110.25589 DBBL,
Karwanbazar Branch, Dhaka.
★Bkash-personal: 01917-285634
★Bkash-personal: 01741-546975
সৈকত মল্লিক
কেন্দ্রীয় সংগঠক
গণসংহতি আন্দোলন