soikot mollik
soikot mollik

রাইড শেয়ারিং-এ অসুবিধা কি হচ্ছে?

রাইড শেয়ারিং-এ অসুবিধা কি হচ্ছে?

Spread the love

রাইড শেয়ারিং করে অজস্র তরুণ-যুবক, এমনকি মধ্যবয়স্ক মানুষও পেটে-ভাতে টিকে ছিলেন। তাঁদের বেশির ভাগই শিক্ষিত যুবক। ওরা পড়াশোনা করেছিলেন নিশ্চয় ‘উবার-পাঠাও-ও ভাই’ চালানোর জন্য না! অন্য কোন কর্ম না পেয়ে, ঠ্যালায়, এই পেশা তারা বেছে নিয়েছেন, শখ করে না। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বাইক দাবড়িয়ে তারা টিকে থাকার চেষ্টা করতেন। আবার স্বল্পবেতনে একটা চাকরি করেও যাদের সংসারে অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য নেই তারা অতিরিক্ত কাজ করেন একটু স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য। সেখানে সরকারের আপত্তিটা কীসের?

এবং রাইড শেয়ারিং সার্ভিস যারা নেন, তারাও বাধ্য হয়েই নেন। কারন ৫০ বছর ধরে চলা আপনাদের বিবিধ উন্নয়নে ঢাকায় যাতায়াত করা কেমন যারা বাসে চলাফেরা করেন তারা জানেন। যে রাস্তা, যে পরিবহন ব্যবস্থা, তাতে কিছুটা হলেও এই সার্ভিস উপকার করেছে মানুষকে। কিছুটা আরাম হয়েছে। যদি তা না হতো তাহলে এতো রাইড শেয়ারিং কোম্পানি গড়ে উঠতো না।

খেয়াল রাখতে হবে- এই পেশা সরকার তাঁদের জন্য তৈরি করেনি, মানুষই প্রয়োজনের তাগিদে এটা উদ্ভাবন করে নিয়েছে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা। মানুষ জীবীকার তাগিদে বিভিন্ন উপায়ে নতুন নতুন প্রযুক্তি ও কাজের সাথে নিজেদের অভিযোজিত হচ্ছেন। আপনাদের ফুটানি মারা জিডিপিতে এদেরও অংশগ্রহন আছে।

রাইড শেয়ারিং-এ অসুবিধা কি হচ্ছে? হকার, রিকশাচালক ইত্যাদি পেশার মানুষের ওপর যে চাঁদাবাজি করা যায় সেটা প্রযুক্তির কারণে করা সম্ভব হচ্ছে না? এটাই কি প্রধান সমস্যা?

উৎসব মোসাদ্দেক

যেমন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। সারাদেশে লাখো রিকশা-ভ্যান চালকদের কষ্ট লাঘব করেছে। মানুষের গতি বাড়িয়ে দিয়েছে। এই উদ্ভাবনটাও বাংলাদেশের মানুষের, সরকারি বিজ্ঞানী/ইঞ্জিনিয়ারদের নয়।

এরকম অজস্র উদ্ভাবন দেশের মানুষ প্রতিনিয়ত তাঁদের মেধা খাটিয়ে, প্রয়োজনের তাগিদে করেছেন, করে যাচ্ছেন।

আর সরকার কী করছে, আর কী করা উচিৎ ছিলো? আমরা দেখি, এইসব উদ্ভাবনগুলোকে আরো মডিফাই করে, আরো সুবিধা তৈরি করা দূরের কথা, বরং পদে পদে ঝামেলা সৃষ্টি করাই সরকারের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঝেমাঝেই দেখি, রাস্তায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা উচ্ছেদ করে; কারণ দেখায় এক্সিডেন্টের। কিন্তু আমরা দেখি না, এগুলোর ঝুঁকি কমানোর জন্য কোন প্রকৌশলবিদ্যার প্রয়োগ। আমরা দেখি না, বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়ার উদ্যোগ, যাতে রাইড শেয়ারিং আরো নিরাপদ হয়! বরং সরকার পারে খালি বিপত্তি তৈরি করতে।

হাজার হাজার উবার-পাঠাও চালক আছেন, যারা ঋণ করে একটা বাইক কিনে জীবনও চালাচ্ছেন, কিস্তিও শোধ করছেন। এরাও দিনমজুর, এরাও দিন আনেন দিন খান।

আর করোনা? সেটা আমদানির কৃতিত্ব তো সরকারের প্রায় একক! বিশাল অর্জন। (সরকারের অর্জন জানতে প্রথম কমেন্টের লিঙ্কে ক্লিক করতে পারেন। ) সেই করোনার অজুহাতে এই মানুষগুলোর মুখের খাবার কেড়ে নিয়েছে এই সরকার। বন্ধই যদি করবেন, তাহলে খাবারের ব্যবস্থা তো আপনাকেই করতে হবে! নাকি? পাঠাও-উবারের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে তাঁদের প্রত্যেকের মোবাইলে ডেইলি টাকা পাঠান, তাইলে আর তারা বিক্ষোভ করবে না। ঠিকই ঘরে বসে থাকবেন, মোবাইলে করোনার সরকারি আপডেট নিবেন!

মানুষকে আর কতো জ্বালাবেন আপনারা? মানুষের কষ্ট লাঘব হতে দেখলে কি আপনাদের কষ্ট হয়? মানুষকে পেটে-ভাতে টিকে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করতে দেখলে কি আপনাদের আলস্যের কথা, অন্যের শ্রম চুরির কথা মনে পড়ে যায়?

সৈকত মল্লিক
কেন্দীয় সংগঠক,গণসংহতি আন্দোলন


Spread the love