প্রেসবিজ্ঞপ্তি
তারিখ: ১৮ মে ২০২১
যে আইন করা হয়েছিল ব্রিটিশ শাসন রক্ষা করার জন্য, বর্তমান ভোটরবিহীন ফ্যাসিবাদী সরকার ব্যবহার করছে নিজেদের রক্ষার জন্য
জোনায়েদ সাকি
আজ ১৮ মে ২০২১ বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তি এবং সচিবালয়ে তাঁর ওপর নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচারের দাবিতে এক মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন দলের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া এবং জুলহাসনাইন বাবু।
সমাবেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যখন তৈরি করা হয়েছে তখন এর ভেতর অফিশিয়াল সিক্রেটস এ্যাক্ট ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। যে আইন করা হয়েছিল ব্রিটিশ শাসন রক্ষা করার জন্য, বর্তমান ভোটরবিহীন ফ্যাসিবাদী সরকার ব্যবহার করছে নিজেদের রক্ষার জন্য। এরাই নাকি আবার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এটা বাংলাদেশের মানুষের ন্যুনতম মানবিক অধিকার, কথা বলার অধিকার হরণ করবে এটা আমরা শুরু থেকেই বলেছিলাম। দেশের গণমাধ্যম কর্মীরা বলেছিল, এ আইন গণমাধ্যমে টুটি চেপে ধরবে। লেখক মোশতাক আহমেদকে কারাগারে হত্যার ভেতর দিয়ে প্রমাণ হলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মানুষকে হত্যা করতে পারে। দেশের নাগরিকদের শুধু কথা বলার অপরাধে জেলে ঢোকানো হয়েছে, অত্যাচার করা হয়েছে। সরকার তার তথ্য মন্ত্রণালয় এমনকি খোদ প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেছেন এ আইন সংবাদমাধ্যমের টুটি চেপে ধরার জন্য নয়, ডিজিটাল জগতের নিরাপত্তার জন্য। আজকে এটা প্রমাণিত যে যখন সংবাদমাধ্যমের ওপর ব্যাপক নিয়ন্ত্রণ বা বিধি-নিষেধ আরোপ ও নানানভাবে সাংবাদিক হয়রানি করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ১৮০০ নিয়োগ এর মধ্যে “এক কোটি এখন দিব, পরে আরও ১ কোটি দেব” বা করোনাকালে চুরি দুর্নীতি এরকম মাঝেমধ্যে দুই-একটা যখন প্রকাশিত হয় তখন এই সরকারের পায়ের তলায় যে মাটি খসে পড়ে। তারা যে লুটপাটের মধ্যে আছে তা প্রকাশিত হয়ে পড়লে ভয়ে তারা পায়। তিনি আরো বলেন, সচিবালয়ের আমলারাও গুন্ডাপান্ডায় পরিণত হয়েছে। তারা একজন সাংবাদিকের গায়ে হাত তোলেন।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম সরকারের স্বাস্থ্যখাতে এই করোনা অতিমারি কালে সংগঠিত দুর্নীতি, অনিয়মকে সামনে এনে জনগণের স্বার্থের পক্ষে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। এর আগেও তাঁর বিভিন্ন ইস্যুতে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে এবং এজন্য তিনি দেশে বিদেশে নানান পুরষ্কার ও স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। গতকালও তিনি পেশাগত কাজে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে যান সচিবের সাথে দেখা করতে। অথচ সেখানকার কর্মকর্তারা সাধারণ শিষ্ঠাচার ও ভদ্রতার ধার না ধেরে রোজিনা ইসলামকে ৫ঘন্টা আটকে রেখেছে, তাঁর ব্যাগ ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছেন। সর্বপরি গোপন নথি চুড়ির অপবাদ দিয়ে বৃটিশ উপনিবেশের তৈরি করা অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনে তাঁর নামে মামলা করা হয়েছে এবং সারা রাত থানায় আটকে রাখা হয়েছে। রোজিনা ইসলাম অসুস্থ হয়ে পরলেও তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা পর্যন্ত করা হয় নাই। তথ্যের অবাধ প্রবাহ বাধাগ্রস্থ করা এবং রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা কর্মচারিদের সন্ত্রাসী আচরণের তীব্র নিন্দা জানান নেতৃবৃন্দ।
বার্তা প্রেরক
বাচ্চু ভূঁইয়া
সদস্য, সম্পাদকমন্ডলী গণসংহতি আন্দোলন