পুরনো কথা, সব কৃতিত্ব ওনার। সব দোষ আমজনতার। পরম করুণাময়ের দয়ায় বাংলাদেশে ইতালির মত ১০ হাজার দৈনিক করোনা রোগী দেখা যায়নি, জনসংখ্যার অনুপাতেও হিসাব করলে বাংলাদেশে তেমনটা হতে পারতো এক লাখ দশ হাজার, মৃত্যু হতে পারতো দৈনিক আড়াই হাজার। ঘনবসতির চিন্তা করলে এই হারটা বহুগুন বৃদ্ধি পেতে পারতো, চিকিৎসা ব্যবস্থার সামর্থ্য চিন্তা করলে আরও বহুগুন।
আমরা কি সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি দেখে ফেলেছি? করোনা আরও ভয়াবহ আকার নিতে পারে তার মিউটেশনে, কিংবা দূরও হতে পারে। ওনারা ওনাদের ভবিষ্যত গোছাচ্ছেন, আমজনতাকে তার রাজনৈতিক প্রস্তুতি নিতে হবে, স্বাস্থ্য-শিক্ষা-গবেষণা অর্থনীতিকে ঢেলে সাজাতে হবে।
না হলে জুয়া খেলা তো চলতেই থাকবে জনগণের স্বাস্থ্য নিয়ে। করোনার ঢেউ আসলে মুখ শুকাবে, কিন্তু তখনও প্রকল্পের নামে ডাকাতিও চলতে থাকবে। করোনা গেলে বলবে আমাদের দেশে তো ওমুক দেশের মত মারা যায়নি!
এবং দেখেন, সত্যিই কিন্তু যা হচ্ছে তাকে তারা স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছে, একদিকে বলছে আমজনতার দোষ (তাহলে ইতালি বা যুক্তরাষ্ট্রের সরকারে্রও প্রধান আলোচনার বিষয় হওয়ার কথা ছিল আমজনতার দায় নিয়ে), আরেকদিকে এইটাকে স্রেফ একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবেই তারা নিয়েছে। আমাদের স্বাস্থ্য খাতটা যে একেবারে ঝুরঝুরো, সেটা নিয়ে কোন চিন্তা দুশ্চিন্তা তাদের নাই।
আমাদের তো মনে রাখতে হবে, করোনা শেষ মহামারী না। এমন আরও নতুন জীবানু-ঘটিত মহামারীও আসতে পারে, কিংবা এমন প্রকরণের করোনাও, যেটা বাংলাদেশের জন্য বিপর্যয়কর হতে পারে।
সভ্যতা মানে হলো প্রস্তুতি। ওনারা প্রস্তুতি নিয়েছেন দেশটাকে শুষে খেয়ে বিলেতে পারি জমাবার। আমরা আমাদের প্রস্তুতি নিচ্ছি না তাদের বিভাজনের খেলায় আটকা পড়ে।
বাংলাদেশে আজকে প্রধান আলোচ্য হওয়া উচিত ছিল এগুলোই। কিন্তু তারা ঠিকই আমাদের বিভক্ত করে রাখতে পারছে মামুনুল-মাদানী ইত্যাদি রগরগে কাহিনী দিয়ে। এই রকম একটা রাজনীতি দখল করা ‘অরাজনৈতিক’ মিত্র থাকাটা সরকারের জন্য কতটা সুবিধাজনক, সেটাও আমাদের ভাবতে হবে।
ফিরোজ আহমেদ
সদস্য, রাজনৈতিক পরিষদ
গণসংহতি আন্দোলন