You are currently viewing অ্যাড. আব্দুস সালাম সশ্রদ্ধ অভিবাদন

অ্যাড. আব্দুস সালাম সশ্রদ্ধ অভিবাদন

গণসংহতি ডেস্কঃ


অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম ১৯৪৯ সালের ২৯শে নভেম্বর মুর্শিদাবাদ জেলার ভগবানগোলা থানার দেবীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন, ১৯৬২ সালে সেখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দেখা দিলে তিনি চলে আসেন রাজশাহীতে। মুর্শিদাবাদে থাকাকালীন সময়েই তার যোগাযোগ হয় অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্ট ফেডারেশন নেতৃবৃন্দের সাথে, তখন তিনি অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র।

২০১৭

১৯৬৫ সালে তিনি রাজশাহী জেলার ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান তবে ১৯৬৫তেই ছাত্র ইউনিয়নে ভাঙন দেখা দিলে তিনি আর ছাত্র ইউনিয়নে সক্রিয় হননি। প্রগতিশীল ছাত্রমৈত্রী, মার্ক্সবাদী লেখক সংঘ, বিপ্লবী সমাজতন্ত্রী সম্মেলন নামে তিনটি সংগঠনের অন্যান্য সাথীদের নিয়ে একটা মোর্চা গড়ে তোলেন এবং নতুন রাজনৈতিক অবস্থান নেন।

২০১৮

১৯৬৮-৬৯ এ তিনি ১১ দফা আন্দোলনে যুক্ত হন এবং ‘৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেন। এসময় তিনি জেলা ছাত্র সংগ্রাম কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৬৮ তে যুক্ত হন মওলানা ভাসানীর কৃষক সমিতিতে।

২০১৯

মার্কসবাদী লেখক সংঘের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য হিসেবে তিনি পূর্ব বাংলার জনগণের জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের কর্মসূচি তুলে ধরেন। এই তিনটি সংগঠন ‘মাইতী গ্রুপ’ নামে বামপন্থী আন্দোলনের ইতিহাসে পরিচিত। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে মাইতী গ্রুপের নেতৃত্ব হিসেবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। রাজশাহী অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তাঁর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা তাঁর সহযোদ্ধা ও ইতিহাস রচয়িতারা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি শুধু ৭১ সালেই মুক্তিযুদ্ধ করেননি বরং চিরকালই মানুষের মুক্তির লড়াইয়ের এক যোদ্ধা থেকে গেছেন।

স্বাধীনতার পরে ১৯৭৩ সালে তিনি ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে। একই বছরে তিনি যুক্ত হন জাতীয় ছাত্রদল গঠন প্রক্রিয়ার সাথে যা মূলত ছিল ন্যাপ (ভাসানী)’র ছাত্র সংগঠন হিসেবে পরিচিত। তিনি কাউন্সিলের মাধ্যমে জাতীয় ছাত্রদলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন। জাতীয় ছাত্রদল ভেঙে গেলে তিনি নিজেকে সেখান থেকে প্রত্যাহার করে নেন।

২০২০

১৯৭৬ সালে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম ফারাক্কা লংমার্চের গুরুত্বপূর্ণ সংগঠক হিসেবে অবদান রাখেন।

১৯৭৮ সালে তিনি শুরু করেন গণতান্ত্রিক পাঠচক্র এবং সামনে নিয়ে আসেন সংবিধান সভা, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক বিনির্মাণ এবং স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুযায়ী সংবিধান রচনার বিষয়গুলো।

ঐক্য প্রক্রিয়া, বামফ্রন্ট গঠন জনমুক্তি পার্টি গঠন এবং সর্বশেষে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী ১১দল সহ নানান ঐক্য প্রক্রিয়া এবং ভাঙন-গড়নের মধ্য দিয়ে অ্যাড. আব্দুস সালাম ১৯৯৬ সালে গঠন করেন গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি। ২০০২ সালে গণসংহতি আন্দোলন গঠিত হবার পর একসাথে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সংবিধান প্রকল্পের কাজ করতে করতে উভয় সংগঠনের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরী হয়। ২০১১ সালে উভয় সংগঠন একসাথে, একই পার্টি হিসেবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৫ সালে গণসংহতি আন্দোলনের তৃতীয় জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলনের মধ্য দিয়ে অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব নেন। আমৃত্যু তিনি এই দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করেছেন।

২০২১

অ্যাড. আব্দুস সালামের স্মরণে গণসঙ্ঘতি আন্দোলন

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রুপান্তর এবং সংবিধানের গণতান্ত্রিক করণ নিয়ে আব্দুস সালাম সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন মুক্তিযুদ্ধের পর থেকেই। একইসাথে গণমানুষের স্বার্থে নেতৃত্বমূলক ভূমিকা পালন করেছেন ফুলবাড়ি কয়লাখনি আন্দোলন, সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলন, টিকফা চুক্তি বিরোধী আন্দোলনের মত অসংখ্য আন্দোলনে।

২৬ মে ২০১৭ তিনি অসুস্থতাজনিত কারণে বড় অসময়ে মৃত্যুবরণ করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা গণসংহতি আন্দোলনের প্রথম নির্বাহী সমন্বয়কারী এ্যাড. আবদুস সালামের ৪র্থ মৃত্যু বার্ষিকীতে নারী সংহতি, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি, ছাত্র ফেডারেশন, গণসংহতি আন্দোলনের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা গণসংহতি আন্দোলনের প্রথম নির্বাহী সমন্বয়কারী এ্যাড. আবদুস সালামের ৪র্থ মৃত্যু বার্ষিকীতে বিভিন্ন সংগঠনের শ্রদ্ধাঞ্জলি।


#জ/উম-৫/১৫

Leave a Reply