অবিলম্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির অপসারণ করতে হবে– গণসংহতি আন্দোলন

অবিলম্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় দায় নিতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে–জোনায়েদ সাকি

 Ganosamhoti

আজ ১৬ জুলাই ২০২০, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সচিবালয়ের সামনে গণসংহতি আন্দোলনের অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। “বিনা চিকিৎসায় আর একটিও মৃত্যু নয়, স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির রাঘববোয়ালদের গ্রেফতার এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির অপসারণের দাবিতে অনুষ্ঠিত এ অবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। অংশগ্রহণ করেন নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফু হক, বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশিদ ফিরোজ, গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা এ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশিদ, ডাকসু ভিপি নূরুল হক নূর রাষ্ট্রচিন্তার সংগঠক ফরিদুল হক। দলের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দলের নির্বাহী সমন্বয়কারী (ভারপ্রাপ্ত) আবুল হাসান রুবলে, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, মনিরুদ্দীন পাপ্পু, জুলহাসনাইন বাবু, কেন্দ্রীয় সদস্য এ্যাডভোকেট জান্নাতুল মরিয়ম তানিয়া, দীপক রায়, তরিকুল সুজনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
অবস্থান কর্মসূচিতে জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতসহ সকল খাতেই দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা, স্বজনপ্রীতি ও সিন্ডিকেট চরম প্রভাব প্রতিপত্তি নিয়েই কাজ করছে। এই করোনাকাল শুরু হওয়ার পর থেকেই স্বাস্থ্য খাতের সকল দূর্নীতির চিত্র মানুষের সামনে আসতে শুরু করে। দুর্নীতিবাদ এবং তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা এতটাই বেপড়য়া যে লুটপাট করতে যেয়ে মানুষের জীবন বিপন্ন করে তুলেছে। করোনা পরিক্ষার সার্টিফেট জালিয়াতি প্রকৃতপক্ষে গণহত্যার সামিল। এই জালিয়াতির কারণে সারা দেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পরেছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি বিপর্জস্ত হয়ে পরেছে। একইসাথে সারা দুনিয়ার সামনে বাংলাদেশ একটি জালিয়াতির দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সারা দুনিয়াতে বাংলাদেশের প্রায় ২ কোটি প্রবাসী শ্রমিক এবং পেশাজীবীরা আজ তাদের কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন না এদের ভ‚য়া রিপোর্ট এর কারণে। অন্যদিকে যারা প্রবাসে অবস্থান করছেন তারাও বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, করোনা বংলাদেশে সংক্রমিত হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত মানুষের জীবন রক্ষার চাইতে তাদের লুটপাটের দিকেই নজর বেশি ছিলো। চরম অযোগ্য ও দুর্নীতি সিন্ডিকেটের প্রশ্রয় দাতা স্বাস্থ্য মন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি এতোকিছু করার পরেও তাদের স্বপদে বহাল আছে এবং গলা উঁচু করে তাদের কুকির্তীর দায় একজন আর একজনের ওপর চাপাচ্ছে। এতো কিছুর পরেও যদি স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে অপসারণ না করা হয় তাহলে তার দায় নিতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, করোনা মহামারি সামাল দিতে সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের বিপদ টের পেয়ে দরের নেতা নেতৃরা আর মন্ত্রীরা দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করেছে। দেশে যখন অর্থনৈকি দুরবস্থা চলছে তখন অর্থমন্ত্রী দেশে নেই। তিনি কেন দেশ ছেড়েছেন, কিভাবে গেছেন? আমরা কিন্তু জানি না। তিনি পলিয়েছেন? গণমাধ্যমের কাছে তিনি জানতে চেয়েছেন। তিনি আরো বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কোথায় যেয়ে ঠেকেছে তার নজির দেখা যাবে বৈদেশিক রিজার্ভে তারা এখন হাত দিতে চাইছে। পৃতিবীতে সম্ভবত এর নজির নাই। বৈদেশিক রিজার্ভের টাকা নিয়ে আমলাদের বেতন দেয়া হবে আর তাদের লুটপাটের মেগা প্রকল্পে অর্থ সরবরাহ করা হবে। তিনি আরো বলেন প্রতিটি দেশ প্রেমিক নাগরিক এবং সকল রাজনৈতিক দলের প্রধান কর্তব্য হলো সরকারের গদি ছাড়ার সঠিক পথ দেখিয়ে দেয়া। তিনি গণসংহতি আন্দোলনকে এই অবস্থান কর্মসূচি নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং সকল গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জালিম সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার আহŸান জানান।
সাইফুল হক বলেন, শাহেদের মতো লুটেরা জালিয়াত হঠাৎ করে আসমান থেকে পরেনি। সরকারের মদদে এবং সরকারের প্রভাবশালীদের ভাগ দিয়েই আস্তে আস্তে বড় হয়েছে। আর দেশে যেহেতু আইনের শাসন নাই, ফলে শাহেদরা ৬ মাসের বেশি কারাগারে থাকবেন না। যেমন জিমে শামীম, স¤্রাট বা অন্যান্য দুর্নীতিবাজরা আটক হয়েছে বটে কিন্তু বিভিন্ন হাসপাতালের ভিআইপি কেবিনে জামাই আদরে বসবাস করছে। এই অবৈধ সরকারই জাতিয়াতি ও লুটপাটের প্রধান মদদদাতা।
বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, এই করোনা মহামারীতে যখন অর্থনীতি ধসের মুখোমুখি তখনও আমরা দেখছি গার্মেন্টস খাতে শ্রমিক ছাটাই করা হচ্ছে গণহারে। সরকার মালিকদের নিয়ে বসে বৈঠক করে বলছে শ্রমিক ছাটাই করা যাবে না অন্যদিকে প্রতিদিন শত শত শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত করা হচ্ছে। সরকার নিজেই রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বন্ধ করে কর্মহীন করেছে ৫০ হাজারের অধিক শ্রমিককে। শ্রমিক আর কৃষকের যদি ক্রয় ক্ষমতা না থাকে তাহলে দেশের পক্ষে ঘুড়ে দাড়ানো সম্ভব হবে না।
নূরুল হক নূর বলেন, সরকারের মন্ত্রী এমপিরা এই করোনা মহামারীর সময় সবচেয়ে বেশি অযোগ্যতার প্রদর্শণ করেছেন। যে যত বেশি অযোগ্য, যতবড় দুর্নীতিবাদ তার কদর তত বেশি দেখা যায়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং তার অধিদপ্তরের ডিজি এত বড় দুর্নীতি করেও প্রধানমন্ত্রীল সমর্থনে খুব ভালো আছেন। প্রধানমন্ত্রী এদের অপসারণ না করলে মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণের পথে অগ্রসর হবে।  
বার্তা প্রেরক
বাচ্চু ভূঁইয়া
কেন্দ্রীয় দপ্তর উপকমিটি
গণসংহতি আন্দোলন
কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি


Leave a Reply