You are currently viewing লালমনিরহাটে নারকীয় হত্যাকান্ডের ঘটনায় গণসংহতি আন্দোলনের গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা, গণপিটুনিতে হত্যা ও লাশ আগুনে পুড়িয়ে ফেলা ঠেকাতে প্রশাসনিক ব্যর্থতা তদন্তের দাবি

লালমনিরহাটে নারকীয় হত্যাকান্ডের ঘটনায় গণসংহতি আন্দোলনের গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা, গণপিটুনিতে হত্যা ও লাশ আগুনে পুড়িয়ে ফেলা ঠেকাতে প্রশাসনিক ব্যর্থতা তদন্তের দাবি

বিবৃতি
৩০ অক্টোবর ২০২০

ঘৃণা-বিদ্বেষ-উগ্রতার ফাঁদে পা না দেয়ার আহবান

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এবং ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল এক বিবৃতিতে গতকাল ২৯ অক্টোবর লালমনিরহাটে কোরআন শরীফ অবমাননার কথিত অভিযোগে একজন ব্যক্তিকে গণপিটুনিতে হত্যা ও লাশ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এই ঘটনায় নিন্দা জানাবার ভাষা খুঁজে পাওয়া কঠিন। নেতৃবৃন্দ ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত দাবি করেন। নেতৃবৃন্দ নিহত ব্যক্তির পরিবারের প্রতিও গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ঘটনা প্রতিরোধে প্রশাসনের ব্যর্থতারও যথাযথ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং আক্রান্ত ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে পুলিশ সময়মত কেন উপস্থিত হতে পারল না সেই জবাবদিহিতাও অত্যন্ত জরুরি। অন্যদিকে কারা এই হত্যাকান্ড সংগঠিত করেছে, তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল, তারও যথাযথ তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বাংলাদেশ দিনকে দিন কতটা নিরাপত্তাহীন একটা জনপদে পরিণত হচ্ছে, এটা তারই সর্বশেষ একটি উদাহরণ। এর মধ্য দিয়ে একদিকে আইন-আদালতের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের যে অনাস্থা, তার একটা বহিঃপ্রকাশ ঘটছে, যে কোন গুজবের ভিত্তিতে যে কোন মানুষকে হত্যার সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে, কোন কারণেই এইভাবে পিটিয়ে হত্যা ও লাশ পুড়িয়ে দেয়া আইনী বিচারেরই শুধু নয়, ধর্মীয় বিধানেও অনুমোদন যোগ্য নয়।

বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে উগ্রতা ও অসহিষ্ণুতার ভাবমূর্তি কোন কোন মহল গড়ে তোলার চেষ্টা করছে, এই নৃশংস ঘটনা তাকে আরও শক্তিশালী করবার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে আরও খারাপ বার্তাই দেবে। কাজেই, যে কোন ঘৃণা-বিদ্বেষ-উগ্রতার ফাঁদে পা না দেয়া, ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সজাগ থাকা এবং সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলাই জনগণের এখন অন্যতম প্রধান কর্তব্য।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ফ্রান্সের রাষ্ট্রপ্রধান ইমানুয়েল ম্যাখোঁ যে ইসলাম ও মুসলিমদের প্রতি যে ঘৃণা ও বিদ্বেষের রাজনীতি প্রচারের তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছেন, তার প্রতিবাদের পাশাপাশি বাংলাদেশে ধর্ম-বর্ণ-জাতি-সম্প্রদায় নির্বিশেষে যেন প্রতিটি মানুষ নিজস্ব বিশ্বাস অনুযায়ী তাদের ধর্ম, চিন্ত্মা ও জীবন চর্চা করতে পারেন তার নিশ্চয়তা বিধানেও জনগণকে সর্বোচ্চ সজাগ থাকতে হবে। জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগই রাষ্ট্রকে এ বিষয়ে বাধ্য করতে পারবে।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দেশে গণতন্ত্রহীনতা, রাজনৈতিক ফ্যাসিবাদ যতই প্রকট হচ্ছে, স্থানীয় পর্যায়ে ততই আমরা দেখতে পাচ্ছি উত্তরোত্তর বেশি হারে গুন্ডাদের রাজত্ব, তার সাথে আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও অস্থিরতা। গণসংহতি আন্দোলন মনে করে এমন প্রতিটি ঘটনায় যেমন অপরাধীদের শাস্তি দেয়া প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন মানুষের মাঝে সহিষ্ণুতার সংস্কৃতি গড়ে তোলা, সর্বোপরি জনগণের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তরণ।

বার্তা প্রেরক
বাচ্চু ভূইয়া
সদস্য, কেন্দ্রীয় দপ্তর উপকমিটি এবং
সদস্য, কেন্দ্রীয় সম্পাদকমন্ডলী, গণসংহতি আন্দোলন

Leave a Reply