মওলানা ভাসানীকে নিয়ে অপপ্রচার ও তার জবাব, Propaganda about Maulana Bhashani and his response, Ganosamhati Andolon, গণসংহতি আন্দোলন, People's Solidarity Movement, Zonayed Saki, জোনায়েদ সাকি, Abul Hasan Rubel, আবুল হাসান রুবেল, Bangladeshi political movement, International solidarity with Bangladesh, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার, বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংস্কার, শ্রমিক অধিকার, Reforming Bangladesh politics, Transparency in Bangladesh politics, Social reform in Bangladesh, গণঅভ্যুত্থান, সংবিধান, সংস্কার, গণতন্ত্র, Democracy, Reform, Constitution, mathal, মাথাল, পরিবহন: শহরটাকে মানুষের শহর বানাবার জন্য নামুন, paribahan shahartake manuser shahor banabar jany namun
মওলানা ভাসানীকে নিয়ে অপপ্রচার ও তার জবাব, Propaganda about Maulana Bhashani and his response, Ganosamhati Andolon, গণসংহতি আন্দোলন, People's Solidarity Movement, Zonayed Saki, জোনায়েদ সাকি, Abul Hasan Rubel, আবুল হাসান রুবেল, Bangladeshi political movement, International solidarity with Bangladesh, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার, বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংস্কার, শ্রমিক অধিকার, Reforming Bangladesh politics, Transparency in Bangladesh politics, Social reform in Bangladesh, গণঅভ্যুত্থান, সংবিধান, সংস্কার, গণতন্ত্র, Democracy, Reform, Constitution, mathal, মাথাল, পরিবহন: শহরটাকে মানুষের শহর বানাবার জন্য নামুন, paribahan shahartake manuser shahor banabar jany namun

মওলানা ভাসানীকে নিয়ে অপপ্রচার ও তার জবাব

মওলানা ভাসানীকে নিয়ে অপপ্রচার ও তার জবাব

[বাংলাদেশে ইতিহাস পাঠ, পর্যালোচনা ও চর্চায় নানা ধরণের সংকট লক্ষ করা যায়। পর্যালোচনার ক্ষেত্র মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ ও বিপক্ষ শক্তি নির্ধারণ, কতিপয় ব্যক্তি কেন্দ্রীক আলোচনায় সীমাবদ্ধ। কিছু ক্ষেত্রে পরিপ্রেক্ষিত না জেনেই অনেকে স্থির সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। তেমন একটি সাধারণ প্রশ্ন বা সিদ্ধান্ত আছে, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের মাধ্যমে গড়ে ওঠা মোশতাক সরকারকে সমর্থন দিয়েছিলেন? ২০১৯ সালের এক আলোচনার প্রেক্ষিতে ফিরোজ আহমেদ এই লেখাটি ফেসবুকে লিখেছিলেন। কায়েমী মহল থেকে ১৫ আগষ্ট এলেই মওলানা ভাসানীর প্রতি এই প্রশ্নটি তোলা হয়, তার উত্তরে লেখাটি আবার প্রকাশ করা হলো।]

মওলানা ভাসানীকে নিয়ে কয়েকটা কৌতুহল জাগানো প্রশ্ন পেলাম, এমনকি আমার লেখা শেয়ার করা কিছু মানুষও এই সব মন্তব্য পেয়েছেন দেখলাম।

একটা প্রশ্ন হলো, ভাসানী ১৫ অগাস্টের হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করেছেন। মোশতাককে সমর্থন দিয়েছেন।

জিজ্ঞেস করলাম, জেনেছেন কোথায়?

তখনকার দৈনিক পত্রিকায়। বড় করে ছাপা হয়েছে তো!

কিন্তু তখন যে চারটা মাত্র পত্রিকা আমাদের খবরের উৎস, সেগুলো তো এর আগেই বাকশাল সরকার সরকারী মুখপাত্র বানিয়ে বাকি সবগুলো পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিলো। মাওলানার প্রতিষ্ঠিত হককথাকে নিষিদ্ধ করেছিল ১৯৭২ সালেই। ফলে মোশতাকের আমলে যে তথ্য আমরা খবরের কাগজসূত্রে পেলাম, সেগুলোর নির্ভরযোগ্যতা কী? কিংবা, এইভাবে গণমাধ্যম কবজা করার পরিনাম যে মানুষের প্রতিক্রিয়া প্রকাশের সুযোগ এবং অভ্যাস দুটোই বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল বাকশালের মাধ্যমে, চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে, আরো নানান সব নিপীড়নমূলক আইন প্রণয়নের মাধ্যমে, এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হলো যে দিনেদুপুরে রক্ষীবাহিনীর হাতে খুন হলেও সে খবর আর পত্রিকায় ছাপা হবে না, যে হাতিয়ারগুলো ব্যবহার করেই মোশতাকের মন্ত্রীসভায় লীগের নেতাদের স্বেচ্ছায় কিংবা বলপ্রয়োগে অংশ নেয়ানো হলো, তার নিন্দা কখনো করেছেন?

৯৫ বছরের বুড়ো ভাসানী ১৫ অগাস্টের বহু আগে থেকেই গৃহে অন্তরীণ ছিলেন। এই বয়োবৃদ্ধ মানুষটিকে কারা গৃহবন্দি করে রেখেছিল? তার নিন্দা করেছেন? সেই ঘরে আটকে থাকা, দুনিয়া থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারিতে আটকে রাখা অসুস্থ মানুষটাকে হাসপাতালে মোশতাক দেখতে গিয়েছিলেন, আওয়ামী নেতাদের মত তিনি বঙ্গভবনে গিয়ে মোশতাককে সমর্থন জানান নাই। এই ছবিটিই ফলাও করে পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল, এবং পত্রিকাতে বাকি সব যা জানি সেটাও বাকশালের সংস্কৃতিতে কবজা করা পত্রিকার ভাষ্য, ভাসানী কি বলেছেন তা সেখানে কিভাবে মিলবে?

অভিযোগ করার আগে অভিযোগের প্রেক্ষাপটা তাই মনে রাখলে বোঝা যায়, অভিযোগকারীই ভয়াবহ একটা পরিস্থিতির সমর্থক, যেখানে কারও মতামত জানারও উপায় ছিল না, এমনই ভয়াবহ ছিল বাকশালি শাসন।

তবু ভাসানী কী মনে করতেন, সেটা জানতে ভাসানীর ঘনিষ্ঠ এবং বিশ্বাসযোগ্য মানুষদের কাছেই যেতে হবে। তাদের অনেকের কাছেই শুনেছি, নিজের সমর্থকদের ওপর এত নিপীড়নের পরও, আওয়ামী লীগের এত গণবিরোধী অবস্থানের পরও ভাসানী ১৫ অগাস্টের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে দারুণ ব্যাথা পেয়েছিলেন। শেখ মুজিবের রাজনৈতিক বিরোধিতা তিনি যতই করুন না কেন, তাকে পুত্রের মতই দেখতেন। প্রতিহিংসাপরায়ন তিনি ছিলেন না, যদিও জনগণের বলপ্রয়োগে গভীর আস্থা পোষণ করতেন।

আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাতেই হয়তো শেখ মুজিবুর রহমানের ফাঁসি হয়ে যেতো বঙ্গবন্ধু উপাধি পাবার আগেই, কেউ তাকে উদ্ধার করার সাহস কিংবা স্পর্ধা দেখায়নি, বন্দি ছিলেন তিনি ঢাকা সেনানিবাসে। ৬৯ এর প্রবল অভ্যূত্থানের ওপর দাঁড়িয়ে ভাসানী হুমকি দিয়েছিলেন, মুজিবকে না মুক্তি দেয়া হলে জনতাকে নিয়ে তিনি ক্যানটনমেন্ট থেকে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসবেন।

এই হলো ভাসানী। ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের ৫০ বছর পূর্তিতে তার প্রাবল্যকে বুঝতে হলে খুচরো খুচরো প্রশ্ন করে কাজ হাসিল হবে না।

 

ফিরোজ আহমেদ,

সদস্য, রাজনৈতিক পরিষদ

গণসংহতি আন্দোলন