You are currently viewing ১৫ মাসেও খুলছেনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : কার লাভ, কার ক্ষতি?

১৫ মাসেও খুলছেনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : কার লাভ, কার ক্ষতি?

করোনা মহামারির এই কঠিন পরিস্থিতিতে কয়েকদিন আগে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। নির্বাচন কেন্দ্রিক প্রচারণায় মানুষের ভিড়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোন বালাই ব্যবস্থা নাই। মজার কথা হচ্ছে করোনার দোহাই দিয়ে বন্ধ রাখা শিক্ষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠাকেই ভোট কেন্দ্র করা হয়েছে। 

আমাদের দেশে নির্বাচনে মানুষের করোনা ছড়ায় না! যার কারণে করোনাকালীন এই সময়ে সংসদ উপনির্বাচন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনসহ বেশ কিছু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এক্ষেত্রে হাজার লোকের সমাগম হলেও করোনা মশাই কাউকে সংক্রমিত করেনা। করোনা শুধু কাগজ, কলম আর বইয়ের ভাঁজে লেপ্টে আছে। 

এই যে এতোগুলো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো তাতে সরকারের কর্তাব্যক্তিদের মুখে করোনা ছড়িয়ে পড়ার গল্প শোনা গেলো না! কারণ এতে তাদের ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থ রয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা বললেই তাদের যতো আপত্তি, হাজির হয় একগাদা খোঁড়া যুক্তি নিয়ে। যেগুলো আসলে ধোপে টেকে না।

করোনার প্রায় ১৫ মাসে শিল্প কলকারখানা, দোকানপাট, পরিবহন, অফিস, আদালত সবকিছুই চলছে শুধু বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তাদের যুক্তি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব নয়। অথচ রাস্তা-ঘাট, বাজার, কারখানা, কিংবা পরিবহনে কতোটুকু  স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় তা আমরা সবাই জানি।

দীর্ঘ ১৫ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় দেশের লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ কোন দিকে যাচ্ছে তা নিয়ে সরকারের কোন মাথা ব্যাথা নাই। তারা পুরো শিক্ষা কার্যক্রমকে ছেলে খেলা বানিয়ে রেখেছে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সময়ে সময়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন আর একের পর এক তারিখ পিছিয়ে দেন। এটাই যেন তার প্রধান ও একমাত্র কাজ। এর বাইরে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে তার বা মন্ত্রণালয়ের বা সরকারের কোন “মেগা প্রকল্প, মেগা সাফল্য,  মেগা গপ্পসপ্প” আমাদের চোখে পড়েনি। এমনকি ভ্যাকসিন দেয়া সম্পন্ন হওয়ার পর করোনাকালীন সময়ের ক্ষতি কীভাবে কতো কমিয়ে আনা যায় তার বিশ্বাস ও বাস্তবায়নযোগ্য কোন প্রস্তাবনা নেই। ঢাকাসহ সারাদেশের শিক্ষার্থীরা পরিকল্পনা জানতে চায়। আর মন্ত্রণালয়ের কথাবার্তা শুনে মনে হয়, এইসব পরিকল্পনা করা সম্ভবত অন্যকোন মন্ত্রণালয়ের কাজ।  

একটা সরল প্রশ্ন, একটা টেকনিক্যাল ও বিশেষজ্ঞবৃন্দের সমন্বয়ে কী কোন পরিকল্পনা গ্রহন করা খুব কঠিন? নাকি এইসব নিয়ে ভাবার কোন কারন দেখেন না মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ? অবশ্য যদি তাদের দায়িত্ববোধ বলে কিছু থেকে থাকে! 

মাঝে মাঝে ভ্যাকসিন সেবা দেওয়ার কথা বললেও কার্যত কোন পদক্ষেপ নাই। শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা কী চরম সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো তৎপরতা দেখা যায়না। চারিদিকে কবরের নিস্তব্ধতা। কেন? তারা কী নিয়ে ব্যস্ত আছেন, কী নিয়ে ব্যস্ত থাকেন এইসব প্রশ্ন করা কি অন্যায় হবে? 

দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা শরীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনেক শিক্ষার্থী অকালেই ঝড়ে যাচ্ছে, কারো কারো অপ্রত্যাশিত বিয়ে হয়ে যাচ্ছে, কেউবা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। এমনকি আত্মহত্যার পথও বেছে নিচ্ছে অনেকে। জরিপে দেখা গেছে করোনা মহামারিতে প্রায় ১৫১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। তরুণ্যের এতো নির্বিকার ক্ষয় আর কোন কোন সমাজে, জাতিরাষ্ট্রে আছে? 

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই নাকি তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে। তারা বলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেই নাকি করোনা ছড়াবে, শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে। তাদেরকে বলতে চাই শিক্ষার্থীরা নিজ বাড়িতেই কতটুকু নিরাপদ, আপনারা কি খোঁজ নিয়েছেন?

তারা কী মানবেতর জীবন যাপন করছে তার কি কোনো খবর আপনাদের কাছে আছে? এই যে এতো শিক্ষার্থী দীর্ঘ সেশন জটে পরে  মানসিক পীড়নের মধ্যে আছেন, অনেকে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। অনেকে আত্মহত্যা করছে তাদের জীবনের দায় আমাদের ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ পরিবারের কেউ নেবে না! 

সরকারের হঠকারী সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীরা আজ দিকভ্রান্ত হয়ে পড়েছে। তাদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। আকাশের কালো মেঘ শিক্ষার্থীদের অবয়বে স্থায়ী ঠিকানা করে নিয়েছে।

গবেষণা বলছে, করোনা বিস্তারের সাথে  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তেমন কোনো সম্পর্ক নাই। কিন্তু সরকার হাঁটছে উল্টো পথে। তারা বাকি সবকিছু চালু রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে। শিক্ষার্থীরা তাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ থেকে রক্ষা পেতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আন্দোলন করলেও সরকার শিক্ষার্থীদের পরোয়া করছে না। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে অটল।

শিক্ষাব্যবস্থাকে সচল করার কোনো সদিচ্ছা সরকারের নাই। এমনকি এদিকে নজর দেওয়ারও সময় তাদের হাতে নেই। বরং তারা ব্যস্ত আছে চুরি, দুর্নীতি ও লুটপাট করে নিজেদের আখের গোছানোর কাজে।

শিশির নামের একটি সংগঠনের অনলাইন আলোচনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, লন্ডনে করোনার মতো মহামারি আসার পূর্বাভাস পেয়েই তারা শিক্ষাব্যবস্থা কীভাবে সচল রাখা যায়, সেটা নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। এবং করোনার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করেন। কিন্তু আমাদের তথাকথিত উন্নয়নের জোয়ারে ভাসতে থাকা বাংলাদেশ প্রায় ১৫ মাসেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার একটা রূপরেখা প্রদান করতে পারেনি। 

সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত দেশগুলো হচ্ছে ইতালী, স্পেন, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, ইরান, সুইডেন,পর্তুগাল ও বেলজিয়াম। অথচ এই দেশগুলোর করোনা সংক্রমণের কয়েক সপ্তাহ পরেই স্কুল-কলেজগুলো খুলে দিয়েছে। মাঝারি আক্রান্ত কানাডা, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, ডেনমার্ক, ইসরাইল, দক্ষিণ আফ্রিকা ইত্যাদি দেশগুলোও বন্ধের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সবসময় স্কুল, কলেজ খোলা রেখেছে। অথচ বাংলাদেশ সবচেয়ে কম আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে একটি হওয়ার পরেও একদিনের জন্যেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলেনি।

আমাদের পাশের দেশ ভারতের দিকে যদি আমরা তাকাই তাহলে দেখবো ভরত প্রথম ওয়েভের পর গতবছর অক্টোবরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছেলো। দ্বিতীয় ওয়েভ আসার পর ল্যানচেট প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ বছর জুলাইয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তা করছে।

কিন্তু আমাদের দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কোনো রকম প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা সরকারের পক্ষ থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছিনা। যেটা সব থেকে হতাশাজনক।

যদি আমাদের দেশের সরকার শিক্ষাবান্ধব হতো, তারা আসলেই শিক্ষার চলমান সংকট নিয়ে ভাবতো, তাহলে এতোদিনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চূড়ান্ত রূপরেখা দাঁড় করানো যেতো। 

আমরা তাদেরকে বারবার বলার চেষ্টা করেছিলাম এই সংকট জাতীয়ভাবে মোকাবেলা করার জন্য সকল দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলুন। কিন্তু তারা কর্ণপাত করেনি। আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, স্বাস্থ্যবিদ, ছাত্র প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে একটা খসড়া রুপরেখা তৈরী করতে পারতাম। যেসব দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা আছে সেসব দেশে কিভাবে ক্লাস পরীক্ষা হচ্ছে সে বিষয়ে আমরা ধারণা নিতে পারতাম।  

বাংলাদেশের বাস্তবতায় কোন প্রক্রিয়ায় শিক্ষাকার্যক্রম চালু করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ সভা করা যেতো। কিন্তু সরকার তা না করে বারবার হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তারা একসময় হঠাৎ করে অনলাইন ক্লাশের ব্যবস্থা করলো। কিন্তু অনলাইনে শিক্ষাকার্যক্রম বাংলাদেশের বাস্তবতায় কতোটুকু ফলপ্রসূ হবে তার কোনো বিবেচনা না করে অনলাইন ক্লাশ শুরু করে। যা শেষ বিচারে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। 

এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের খামখেয়ালীপনায় বন্ধ আছে শিক্ষাকার্যক্রম, অথচ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চাইলে সবার আগের নিজেদের সক্ষমতার ভিত্তিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে পারতো। কোন প্রক্রিয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা যায় সে বিষয়ে আমরা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রূপরেখা হাজির করলেও তারা নানান অযৌক্তিক অযুহাতে কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। 

সরকার নানান অযুহাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ রাখছে তার একটা আলোচনা হাজির করা প্রয়েজন। একটি রাষ্ট্রে যখন শিক্ষার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক ও জাতীয় সক্ষমতার বিকাশ ঘটবে তখন সেই রাষ্ট্রের জনগণ সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে অস্ত্রের মুখেও কথা বলবে। ছাত্র সমাজ সবার আগেই ঝাঁপিয়ে পরার দরকার হবেই না হয়তো। তারা প্রতিবেশের জন্য উপযোগী একটা বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারতো। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। আমাদের দেশে শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক দায়িত্ব নিতে হয়। বিকল্প হয়ে, ব্যাতিক্রম হয়ে  দাঁড়াতে হয়। এই বিকল্প হয়ে দাঁড়ালে সরকারের লুজ মোশন হয়ে যায়। এতোদিনেও টিকা, হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন প্রবাহের ব্যবস্থাসহ মহামারি মোকাবেলায় কিচ্ছুটি করতে পারেনি সরকার। তাদের ধারণা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলে তাদের এই ক্ষমার অযোগ্য অবহেলার কারনে বড় কোন ছাত্র আন্দোলনের চাপে পরতে হবে। 

আমাদের দেশের বর্তমান স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকার এটা স্পষ্টভাবে আঁচ করতে পারছে যে তারা দেশব্যাপী যে লুটপাট, দুর্নীতি, গুম, খুন ধর্ষণের যে অপরাজনীতি প্রতিষ্ঠা করছে বর্তমান সময়ে তা আরো বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ফলে এমন সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে ছাত্র জনতার আন্দোলনের তোপে পরার শংকায় তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে রেখেছে। এছাড়া দৃশ্যত অন্য কোনো কারণ আমরা দেখছি না। 

স্বৈরাচারী সরকার বরাবরই আন্দোলনকে ভয় পায়, ফলে বৃহত্তর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কোনোরকম বিকল্প নাই। তারা এমনি এমনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেবেনা। ফলত আমাদের করণীয় এখন স্পষ্ট। 

আরেকটা কথা বলে রাখি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি শুধু শিক্ষার্থীদের একার নয়। এটা সর্বস্তরের জনগণের দাবি। কারণ, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শিক্ষাকার্যক্রমের সাথে সারাদেশে সকল মানুষের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। 

দীর্ঘদিন শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ রেখে আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে যে হুমকির মুখে ফেলেছে, সেখান থেকে উত্তরণের জন্য সকলকে একতাবদ্ধ হয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে সকলকে বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানাই।

মহব্বত হোসেন মিলন
সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় 


জ/উম-৬/১২

Leave a Reply